রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মবার্ষিকী তথা পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে নবী পাক (সা:) এর জীবনীর উপর সংক্ষিপ্ত আলোচনা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আয়োজনে একাডেমিক ভবন-১ এ এই আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় ।
এসময় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) এর জীবনী নিয়ে আলোচনা, হামদ্-নাত,গজল ও প্রবন্ধ উপস্থাপন করে। পরে দোয়া ও মিলাদ অনুষ্ঠিত হয় । এসময় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাধারণ শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে বলেন, প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৭০ খ্রিস্টাব্দে ১২ই রবিউল আউয়াল মানব জাতির জন্য রহমত হিসেবে মহানবী হজরত মুহম্মদ (সা.) এর শুভ আগমন ঘটে।
দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদ-এ মিলাদুন্নবী (সা.) নামে পরিচিত। এই দিনে আরবের মক্কা নগরীর সভ্রান্ত কুরাইশ বংশে মা আমিনার কোল আলো করে জন্ম নেন দু’জাহানের নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। আবার ৬৩ বছর বয়সে একই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মহানবী (সা.) এর জন্মের আগে অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল গোটা আরব। সে সময় আরবের মানুষ মহান আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’র যুগ।
তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করতো। এ অন্ধকার যুগ থেকে মানবকুলের মুক্তিসহ তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতাআলা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে দুনিয়ায় পাঠান। মহানবী (সা.) অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ বা মহান রাব্বুর আলামিনের নৈকট্য লাভ করেন।
পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না’। এসব কারণে দিনটির গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি।তাই মুসলিমরা দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন শিক্ষার্থী ইমন রানা বলেন, আমাদের রাসূল(সা.)আমাদেরকে মানবতা শিক্ষা দিয়েছেন,প্রেম,প্রীতি,ভালোবাসার শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি ধর্ম প্রচার করার ক্ষেত্রে কিংবা অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষকে কখনোই কিন্তু আঘাত করেন নি উল্টো উনি ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে মার ও খেয়েছেন কিন্তু তাও তিনি তাদের জন্য কখনোই আল্লাহর কাছে ধ্বংস চান নি। আমরা জানি আমাদের রাসূল(সা.)পুরো বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের রহমত স্বরূপ এই পৃথিবীতে আগমন করেছেন।উনার এই আগমনে আমরা আনন্দিত।আমরা উনাকে ভালোবাসি আর আজীবন বাসবো।উনি কখনো উগ্রতা শিক্ষা দেন নি কিন্তু আজকে দেখছি আমাদের মুসলমান এর মধ্যেই একদল উগ্র হয়ে যাচ্ছে দিনদিন। রাসূল(সা.)তাঁর বিদায় হজ্জ্বের ভাষনে বলেছিলেন তোমরা কেউ ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করো না। নিজের ধর্ম অন্যর উপর জোর করে চাপিয়ে দিয়ো না। কিন্তু একটা দলকে ধর্ম নিয়ে চরমভাবে বাড়াবাড়ি করতে দেখছি। আমরা এই কাজে তীব্র নীন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আর এই ছাত্র সমজ এটা মেনে নিবে না।আমরা প্রয়োজনে অলি আল্লাহর জন্য আবার মাঠে নামবো।এই যে মাজার,দরবার ভাংচুর করছে,ধর্মীয় উপাসনালয় ভাংচুর করছে এটা তো দয়াল নবী আমাদের শিক্ষা দেয় নি।আমরা সহনশীল হই,প্রত্যেকটা মানুষ যেন প্রত্যেকের কাছে নিরাপদে থাকে এটাই চাওয়া।