গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল নেদার‌ল্যান্ডসের রাজধানী আমস্টারডাম। তবে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে মঙ্গলবার ১৬৯ জন বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। পাশাপাশি নিজেদের সহজাত ভূমিকার বাইরে গিয়ে ব্যাপক কঠোরতা প্রদর্শন করেছে তারা।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামে (ইউভিএ) পুলিশি অভিযান থেকে বিক্ষোভের সূত্রপাত। প্রায় এক সপ্তাহ আগে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাক্ষরিত সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন নেদারল্যান্ডসের প্রধান উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামের (ইউভিএ) ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন চালিয়ে নেয়ার জন্য মার্কিন শিক্ষার্থীদের মতো তারাও ক্যাম্পাস চত্বরে অস্থায়ী তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নেন।

সোমবার সন্ধ্যার দিকে বুলডোজার দিয়ে ক্যাম্পাসে আন্দোলনকারীদের তাঁবু তছনছ করে দেয় পুলিশ। পাশাপাশি বিক্ষোভ বন্ধ করতে আন্দোলনকারীদের আহ্বানও জানায়। প্রত্যক্ষ্যদর্শীরা জানান, এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইসরায়েলের একটি পতাকা পুড়িয়ে দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। তবে তখন কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

অভিযানের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডাম সব সময় শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পক্ষে, কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা সমর্থনযোগ্য নয়।’ পরে মঙ্গলবার সকাল থেকে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের হয় আমস্টারডাম শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। শত শত মানুষ এসব মিছিলে যোগ দেন।

আন্দোলনকারীরা মিছিল করে আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিমুখে রওনা হন। তাদের একটি অংশ ক্যাম্পাসে পৌঁছে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় ফের অভিযানে নামে পুলিশ এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও আশপাশের এলাকা থেকে ১৬৯ জনকে আটক করে।

পুলিশের অভিযানের পর ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামের ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের মঞ্চ ডাচ স্কলার্স ফর প্যালেস্টাইন এক বিবৃতিতে অভিযোগ করেছে, মঙ্গলবার গ্রেপ্তারের পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের ওপর ব্যাপক মাত্রায় লাঠি, পিপার স্প্রে এবং টিয়ার শেল ব্যবহার করেছে পুলিশ। এতে অনেকে আহতও হয়েছে।

তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক বার্তায় আমস্টারডাম পুলিশ বলেছে, বার বার অনুরোধ জানানো সত্ত্বেও আন্দোলনকারীরা শান্ত না হওয়ায় ক্যাম্পাসের পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশকে কঠোর হতে হয়েছে। আটকদের মধ্যে ৪ জন ব্যতীত বাকি সবাইকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে বার্তায়।