জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে পশ্চিম সুদানের দারফুনে মানুষের অনাহার ঠোকানোর সময় ফুরিয়ে আসছে। চলমান সহিংসতা পুরো আফ্রিকান এই জাতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে দেশটির মানুষ ক্ষুধা নিবারণে ঘাস এবং বাদামের খোসা খেয়ে থাকছে। পূর্ব আফ্রিকার ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) আঞ্চলিক পরিচালক মাইকেল ডানফোর্ড শুক্রবার (০৩ মে) এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দ্রুত তাদের কাছে সহায়তা না পৌঁছালে দারফুর ও সংঘাত বিধ্বস্ত সুদানের অন্যান্য এলাকায় ব্যাপক অনাহার এবং মৃত্যুঝুঁকি দেখতে হতে পারে।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদানের সেনাবাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী ‘র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস’ (আরএসএফ) এর মধ্যে সংঘাত বাঁধলে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এর ফলে খাদ্য সংকট চরমে উঠেছে। যৌন সহিংসতা, গণহত্যার মত কর্মকাণ্ড ও বেসামরিক মানুষ হত্যার ঘটনায় মানুষ দ্রুত ঘরবাড়ি ছেড়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবারও ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অব দ্য রেডক্রসের (আইসিআরসি) দুজন চালক দক্ষিণ দারফুরে অস্ত্রধারীদের হাতে নিহত হন। আরো তিনজন কর্মী আহত হন। আরএসএফ উত্তর দারফুরের রাজধানী এল ফাশের ঘেরাও করার সময় সবশেষ সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
সুদানে জাতিসংঘের ডেপুটি হিউম্যানিটেরিয়ান কোঅর্ডিনেটর টবি হেওয়ার্ড বলেন, ‘শহর ও আশপাশের এলাকাগুলোতে নির্বিচার হত্যাকাণ্ড, পরিকল্পিতভাবে পুরো গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়া এবং ক্রমাগত বিমান থেকে বোমা হামলা হয়েছে।’
তবে এল ফাশের শহরটি আরএসএফ এখনও দখল করতে পারেনি। ফলে সেখানে ৫ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। দিন দিন পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় সেখান থেকেও মানুষজন পালিয়ে যাচ্ছে।
ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বৃহস্পতিবার বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া সংঘাতে এল ফাশের ও এর আশপাশে ৪৩ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা আর সংঘাতের কারণে দারফুরে খাদ্য সহায়তা বিতরণে কর্মকাণ্ড থেমে গেছে। ওই অঞ্চলের ১৭ লাখ মানুষ তীব্র ক্ষুধায় ভুগছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএফপি।
এই যুদ্ধের কারণে সুদানে ৪৬ লাখ শিশুসহ ৮৭ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছে। ২ কোটি ৪৮ মানুষের সহায়তা প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউএন অফিসার ফর দ্য কোঅর্ডিনেশন অব হিউম্যানেটারিয়ান অ্যাফেয়াস (ওসিএইচএ)
সূত্র: সিএনএন