মাগুরা’র শালিখা উপজেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র মতে ৬হাজার ৭শ ৮০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। উপজেলার মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে হলুদ সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্য।
এ সময়ে সরিষা ফুল কেন্দ্রিক মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌচাষিরা। সরে জমিনে উপজেলার বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। সরিষা ক্ষেতের পাশে শত শত মৌবাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহের জন্য বাক্স ও মৌমাছিদের জন্য পরিচর্যার কাজ করছেন মৌচাষিরা।
মৌমাছির দল এক ফুল থেকে অন্য ফুলে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে গিয়ে জমা করছে। মৌয়ালরা একটি নির্দিষ্ট সময়ে তাদের পেতে রাখা বাক্স থেকে মধু সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করার জন্য ড্রামে ভরে রাখছেন।
কথা হয় উপজেলার রামকান্তপুর মাঠে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে আসা মৌচাষী নড়াইল সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের জুয়েল রানার সাথে। মৌচাষি জুয়েল রানা জানান, মধু সংগ্রহ করার জন্য কাট দিয়ে বিশেষভাবে তৈরি করা হয় বাক্স, রোদ বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে বাক্সের উপরের অংশে কালো পলিথিন অথবা পাটের চট দিয়ে মুড়িয়ে রাখতে হয়।
বাক্সে মৌমাছির অবাধ চলাচলের ছিদ্রপথ দিয়ে মাছিগুলো বাক্সের ভিতরে প্রবেশ করে।
বাক্সে বিশেষ কৌশলে রাখা রানী মাছিকে অনুসরণ করে ভিতরে প্রবেশ করে সমবেত হয় শ্রমিক মাছিরা।
প্রতিটি মৌবাক্সে ৭থেকে ১০টি কাঠের ফ্রেমের সঙ্গে মাছি মধু সঞ্চায়ন করে। পরে মৌবাক্স থেকে ফ্রেমগুলো বের করে মেশিনের মাধ্যমে বিশেষ কৌশলে সংগৃহীত মধু বাজারে বিক্রির উপযোগী করা হয়ে থাকে।
মৌচাষী রুবেল জানান, সরিষা, লিচু, বড়ই, কালোজিরা, ধনিয়া ফুলকে কেন্দ্র করে বছরের ৬ মাস মধু সংগ্রহ করে থাকি। তাদের দুটি সাইডে পেতে রাখা ৯০ টি মৌবাক্স থেকে সপ্তাহে ৩০০ থেকে ৩২০ কেজি মধু সংগ্রহ হয়। প্রতি কেজি মধুর বর্তমান বাজার মূল্য ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা তিনি দৈনিক ১৩ থেকে ১৪ হাজার টাকা আয় করছেন। হিসাব মতে ১৮০ দিনে (ছয় মাসে) ৯০বাক্স থেকে প্রায় ২৫লাখের উপরে আয় হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, মৌমাছি গুলো সরিষা ফুলের সংস্পর্শে আসে তখন সরিষার পরাগায়ন ঘটে। এতে সরিষার ফলনের পরিমান ১৫ থেকে ২০শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাই কৃত্রিম উপায়ে মৌচাষকে ফলন বৃদ্ধি ও উপার্জনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় বলে মনে করেন তিনি।